মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১২

শোশা....is a haunting rather than a novel...


"মানুষের যন্ত্রণার শেষ আমি দেখতে পাই না। যখনই একটা যন্ত্রণার শেষ হচ্ছে বলে মনে হয় তখনই মানুষ নতুন যন্ত্রণাকে আবিস্কার করে বসে এবং এভাবেই তা চলতে থাকে এক অনি:শ্বেষ প্রবাহের মত। কষ্ট,যন্ত্রণা,বেদনাভোগই আমার পাত্র-পাত্রীদের পরিণাম।"



আইজাক বাশেভিস সিঙার (জন্ম নভেম্বর ২১,১৯০২ইং - মৃত্যু জুলাই ২৪,১৯৯১ইং) একজন মার্কিন কথাসাহিত্যিক হলেও জন্মসুত্রে পোলিশ। ১৯৭৮ সালে সাহিত্যে লাভ করেন নোবেল পুরস্কার। তিনি মূলত সাহিত্য রচনা করেছেন ঈডিশ ভাষায়। নোবেল বক্তৃতায়,ঈডিশ ভাষাকে বিশ্বসাহিত্যের ভিটামিন বলে অভিহিত করেন। ঈডিশ ভাষায় নির্মিত সাহিত্যকর্মগুলো এতো গুরুত্বের দাবীদার এই জন্যে,যে ভৌগলিক সীমানায় এ ভাষার উদ্ভব,সেই ভৌগলিক সীমানাই আজ ঐতিহাসিকভাবে বিলুপ্ত। বলা চলে আজ এটা একটি অ্যান্টিক ভাষা। ঈডিশভাষী আজ বিলুপ্তপ্রায় অপমৃত্যু ও দেশত্যাগের কারণে। বর্তমানে এই জনগোষ্ঠী মার্কিন যুক্তরাস্ট্র,ইজরায়েল ও ইউরোপে আজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।




এই উপন্যাসটি কোনভাবেই হিটলারপূর্ব বছরগুলিতে পোল্যান্ডের ইহুদিদের প্রতিফলন নয়। এটি হচ্ছে অনন্যসাধারণ পরিস্থিতিতে থাকা অনন্যসাধারণ কিছু চরিত্রের গল্প।- Issac Bashevis Singer


সিঙারের বেশিরভাগ সাহিত্যেই কোথাও না কোথাও তার নিজের আত্মকাহিনী খুঁজে পাওয়া যায়,ব্যাতিক্রম এই "শোশা"ও নয়। ব্যক্তিগত জীবনে সিঙার "শোশা"র নায়ক এ্যারনের মতই। এ্যারনের জীবনের যেমন বহু নারীর বিচরণ দেখা যায়,সিঙারের জীবনেও দেখা যায়,যা অকপটে নিজের ছেলে ইজরায়েল জামির কাছে সে স্বীকার করে।
"শোশা" তে মূলত প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাহিনী ফুঁটে উঠে,যেখানে ইহুদিঅধ্যুষিত পোল্যান্ডের একটি স্থান ক্রোখমালনাকে... খুঁজে দেখা যায়। দেখা যায় এখানকার পারিবারিক ও সামাজিক জীবন। দেখা যায় বিচিত্র মানুষ ও তাদের সমাজ ব্যবস্থা। যেখানে পরিবেশ উৎসবমুখর,সংস্কারে বিশ্বাসী আবার আছে অপেক্ষাও। কেউ অপেক্ষা করছে ত্রানকর্তা তাদের উদ্ধার করবে অনাচার থেকে...কেউ অপেক্ষা করছে কখন তারা হিটলারের শিকারে পরিণত হবে। সিঙার "শোশা"তে ইহুদি জাতিকে এমনভাবে দেখিয়েছে যারা বিভিন্ন প্রাচীন প্রথায় নিজেদের আটকে রেখেছে,সমস্ত জানালা-দরজা বন্ধ করে কেবল স্বর্গ নরকের হিসেব নিকেশ করে,যাদের কোন প্রসারতা নেই। "শোশা"র নায়ক এ্যারন বলে...

নয়শ বছর ধরে পোল্যান্ডে বসবাস করেও ইহুদিরা পোলিশ হতে পারে নি...তারা ইহুদিই।
"শোশা" তাদের কাহিনী যারা যুগ যুগ ধরে পোল্যান্ডবাসী অথচ তারা জন্ম থেকেই বিচ্ছিন্নতাবোধে আক্রান্ত। যাদের চোখে শুধু পবিত্র ভূমির স্বপ্ন।
সমালোচক মহলে আইজাক সিঙার একজন রহস্যময় মানুষ যিনি পুরোপুরি ধার্মিক নন আবার ধার্মিকও। কখনো কখনো তাকে তার বাবার মত গোঁড়া ধার্মিক বলে মনে হয় আবার কখনো কখনো তার ভাই জশুয়ার মত উদার।
"শোশা"তে এক জায়গায় সিঙার বলেছেন...

"সব মানুষই আনন্দবাদী। দোলনা থেকে সমাধি পর্যন্ত সবাই কেবল আনন্দের কথা ভাবে। ধার্মিকেরা কী চায়?অন্য লোকে গিয়ে আনন্দ। সাত্ত্বিকেরা কি চায়?আধ্যাত্মিক আনন্দ বা কিছু একটা। আমার লক্ষ্য আরোও দূরে। আমার মতে,আনন্দ কেবল জীবনেই ঘটে না,ঘটে সমগ্র বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডে। স্পিনোজা বলেন,ঈশ্বরের দুটো বিশেষত্বের কথাই আমরা জানি- চিন্তা ও বিস্তার। আমি বলি ঈশ্বর মানে আনন্দ। আনন্দ যদি একটি সত্তা হয় তবে অবশ্যই এটা গঠিত অনন্ত ভাবের দ্বারা। এর মানে এখনও অগুনতি অজানা আনন্দ আবিস্কারের অপেক্ষায় আছে।"

"আমি ধার্মিক আমার নিজের ধরনে। আত্মার অমরতায় আমি বিশ্বাস করি। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পাষাণ যদি টিকে থাকতে পারে,তাহলে মানবাত্মা কিংবা যা খুশী নাম দাও এর,কেন ধ্বংস হয়ে যাবে?আমি তাদের সঙ্গে আছি যারা মৃত। আমি তাদের সঙ্গে বসবাস করছি। যে মুহুর্তে আমি চোখ বন্ধ করছি তারা সবাই আমার সঙ্গে আছে। আলোর রশ্মি যদি কোটি কোটি বছর ধরে ভ্রমণ ও বিকিরণ করতে পারে তো আত্মা পারবে না কেন?"

"শোশা"তে এক জায়গায় বলতে দেখি....
"মানুষ নিজে নিজের যতটা ক্ষতিসাধন করে কোন শত্রু তা করতে পারে না।"

হয়তবা এর জনেই অন্য জায়গায় এক জনের বিলাপ কানে আসে.....

"মানুষ কী করতে পারে?মানুষ বাঁচে কীভাবে?"

Isaac Bashevis Singer begins with a disconcerting irony: "I was brought up in three dead languages - Hebrew, Aramaic, Yiddish." This ironic statement functions as an invocation of those dead who spoke, specifically, the Yiddish of Poland. He invites us to a seance to hear their voices; Shosha is a haunting rather than a novel.


** "শোশা" প্রথম প্রকাশিত হয় ঈডিশ ভাষায় ১৯৭৪ইং সালে এবং এর ইংরেজি অনুবাদ প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৭৮ইং এ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সাহর- শাহরিয়ার খান শিহাব

#পাঠপ্রতিক্রিয়া: "বড় হুজুর বলেন, 'শয়তান কাউকে নিজের দলে আসতে বাধ্য করে না। করতে পারেও না, সেই ক্ষমতাও তার নাই। সে শুধু আহবান করে, ফ...