সোমবার, ১৫ জুন, ২০২০

ফিরে আসিস আবার যদি পারিস.. Sabiha Rumi

ফিরে আসিস আবার যদি পারিস
তোর সাথে আবার দেখা হবে এই আশায় কেটে গেল অনেকটা কাল।
তোর সাথে আবার দেখা হলে
বলে দিবো সব হারানোর কথা ,
ফিরিয়ে নেবো সেই ভুলে ভরা ওয়াদা,
বলে দেবো সব না বলা কষ্ট
ভাংগা গড়ার বেদনা গাঁথা
শুনিয়ে দেব বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখা স্বপ্ন কথা,
তোর সাথে দেখা হলেই হয়ে যাব সেই বাইশ ছেরে তেইশে পরা ফরিং ,
কল্পনার নদ না
সত্যিকারের বালুর পথ,
 লাল হলুদ নীলচে শাড়ির রং,
আর শান্ত ধোয়াটা মেঘজাল
আমরা হাটবো ওই সেই নদীর পার।
চুকিয়ে দেবো সব দেনা
চেয়ে নিবো আমার পাওনা
ভোরের কুয়াশা , দুপুর এর তাপ ,
বিকেলে হলদেটে রোঁদ,
সন্ধে বেলার আকাশ আর
শেষ সীমন্তে  আঁকা ময়ূরকন্ঠি নীলরং ,
আবার নতুন করে ছুঁয়ে নেবো সব
তোর হাতে রেখে হাত ।
তোর সাথে দেখা হবে আবার ,এই আশায় কাটিয়ে দিবো আরো অনেকটা কাল
ফিরে আসিস আবার যদি পারিস
তোর সাথে দেখা হবে আবার ,
এই আশায় কেটে যাচ্ছে অনন্তকাল

বুধবার, ৩ জুন, ২০২০

মাগো, ওরা বলে – আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ

‘কুমড়ো ফুলে ফুলে
নুয়ে পড়েছে লতাটা,
সজনে ডাঁটায়
ভরে গেছে গাছটা,
আর, আমি ডালের বড়ি
শুকিয়ে রেখেছি—
খোকা তুই কবে আসবি!
কবে ছুটি?’

চিঠিটা তার পকেটে ছিল,
ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।

‘মাগো, ওরা বলে,
সবার কথা কেড়ে নেবে
তোমার কোলে শুয়ে
গল্প শুনতে দেবে না।
বলো, মা, তাই কি হয়?
তাইতো আমার দেরী হচ্ছে।
তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে
তবেই না বাড়ী ফিরবো।
লক্ষ্মী মা রাগ ক’রো না,
মাত্রতো আর কটা দিন।’



‘পাগল ছেলে’ ,
মা পড়ে আর হাসে,
‘তোর ওপরে রাগ করতে পারি!’

নারকেলের চিঁড়ে কোটে,
উড়কি ধানের মুড়কি ভাজে
এটা সেটা আরো কত কি!
তার খোকা যে বাড়ী ফিরবে!
ক্লান্ত খোকা!

কুমড়ো ফুল
শুকিয়ে গেছে,
ঝ’রে প’ড়েছে ডাঁটা;
পুঁইলতাটা নেতানো,—
‘খোকা এলি?’

ঝাপসা চোখে মা তাকায়
উঠোনে, উঠোনে
যেখানে খোকার শব
শকুনিরা ব্যবচ্ছেদ করে।

এখন,
মা’র চোখে চৈত্রের রোদ
পুড়িয়ে দেয় শকুনিদের।
তারপর,
দাওয়ায় ব’সে
মা আবার ধান ভানে,
বিন্নি ধানের খই ভাজে,
খোকা তার
কখন আসে! কখন আসে!

এখন,
মা’র চোখে শিশির ভোর,
স্নেহের রোদে
ভিটে ভরেছে।

ক্ষেতমজুরের কাব্য - নির্মলেন্দু গুণ

মুগুর উঠছে মুগুর নামছে
ভাঙছে মাটির ঢেলা,
অাকাশে মেঘের সাথে সূর্যের
জমেছে মধুর খেলা।
ভাঙতে ভাঙতে বিজন মাঠের
কুয়াশা গিয়েছে কেটে,
কখন শুকনো মাটির তৃষ্ণা
শিশির খেয়েছে চেটে।
অতটা খেয়াল রাখে নি কৃষক
মগ্ন ছিল সে কাজে,
হঠাৎ পুলক পবনে হৃদয়
পুস্পিত হলো লাজে।
ফিরিয়া দেখিল বধূটি তাহার
পেছনে অালের 'পরে
বসে অাছে যেন ফুটে অাছে ফুল
গোপনে চুপটি করে।
সামনে মাটির লাল সানকিটি
জরির অাঁচলে বাঁধা,
অাজ নিশ্চয় মরিচে রসুনে
বেনুন হয়েছে রাঁধা।
হাসিয়া কৃষক মরাল বাঁশের
মুগুর ফেলিয়া দিয়া
কামুক অাঁখির নিবিড় বাঁধনে
বাঁধিল বধূর হিয়া।
বরুণ গাছের তরুণ ছায়ায়
দু'জনে সারিল ভোজ,
বধূর ভিতরে কৃষক তখন
পাইল মনের খোঁজ।
মেঘ দিল ছায়া, বনসঙ্গমে
পুরিল বধূর অাশা-;
মনে যা-ই থাক, মুখে সে বলিল:
'মরগে' বর্গা চাষা।'
শব্দটি তার বক্ষে বিধিল
ঠিক বর্শার মতো,
'এই জমিটুকু অামার হইলে
কার কী- বা ক্ষতি হতো ?'
কাতর কন্ঠে বধূটি শুধাল:
অাইছ্যা ফুলির বাপ,
অামাগো একটু জমিন অবে না?
জমিন চাওয়া কি পাপ ?'
'খোদার জমিন ধনীর দখলে
গেছে অাইনের জোরে,
অামাগো জমিন অইব যেদিন
অাইনের চাকা ঘোরে।'
অসহায় বধূ জানে না নিয়ম
কানুন কাহারে বলে-;
স্বামীর কথায় চোখ দু'টি তার
সূর্যের মতো জ্বলে।
'বলদে ঘোরায় গাড়ির চাক্কা
নারীর চাক্কা স্বামী-;
অাইনের চাকা অামারে দেখাও
সে- চাকা ঘুরামু অামি।'
কৃষক তখন রুদ্র বধূর
জড়ায় চরণ দু'টি,
পা- তো নয় যেন অন্ধের হাতে
লঙরখানার রুটি।
যতটা অাঘাত সয়ে মৃত্তিকা
উর্বরা হয় ঘায়ে,
ততটা অাঘাত সইল না তার
বধূর কোমল পায়ে।
পা দু'টি সরিয়ে বধূটি কহিল:
'কর কী? কর কী? ছাড়ো,
মানুষে দেখিলে জমি তো দেবি না
দুন্যাম দেবি অারো।'
পরম সোহাগে কৃষক তখন
বধূর অধর চুমি,
হাসিয়া কহিল: 'ভূমিহীন কই?
অামার জমিন তুমি।'
অাকাশে তখনো সূর্যের সাথে
মেঘেরা করিছে খেলা,
মুগুর উঠছে মুগুর নামছে
ভাঙছে মাটির ঢেলা।

সাহর- শাহরিয়ার খান শিহাব

#পাঠপ্রতিক্রিয়া: "বড় হুজুর বলেন, 'শয়তান কাউকে নিজের দলে আসতে বাধ্য করে না। করতে পারেও না, সেই ক্ষমতাও তার নাই। সে শুধু আহবান করে, ফ...