বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১

শেষ পান্ডুলিপি - নজরুল ইসলাম


"নিয়তিতে বিশ্বাস করেন?"

"একটি খুনের নেপথ্যে" দিয়ে লেখকের সাথে পরিচয় এবং ভাল লাগা। থ্রিলার ঘরানার ছিল। "শেষ পান্ডুলিপি" ভাল লাগা বাড়িয়েছে।

লেখকের লেখা সাবলীল, চরিত্রগুলির অঙ্কন দারুন। বই পড়ে যদি সময়, চরিত্রগুলিকে চোখের মাঝে ভেসে বেড়াতে না দেখি, তবে বই আলগোছে সরিয়ে রেখে দেই। কিন্তু এই লেখক ধরে রাখতে পারেন, তার সহজ লেখার ধারায়।

থ্রিলার ঘরানায় লিখতে গেলে খেয়াল রাখতে হয়, পাঠক খুব দ্রুত ইন্টারেস্ট হারায়, শুধুমাত্র "পরের পৃষ্ঠায় কি আছে" এই প্রশ্নটির অ্যাবসেন্স এর জন্যে। কিন্তু লেখক সেটা খুব চমৎকারভাবেই বজায় রেখেছিলেন।

লাইব্রেরীতে চেনা লেখকের বইটি হাতে নিয়ে যখন "প্রারম্ভ" অধ্যায়টি এক নি:শ্বাসে পড়ে ফেলি, তখন কিছুক্ষণ বুকে ব্যথা করছিল। তারপরই বই ব্যাগে গুজে বের হয়ে সোজা বাসায়।


কাহিনীতে দেখা যায়, এক লেখক, "নওরোজ মোস্তফা", বহু বছর পর এমন এক শহরে ফিরে আসেন, তার অতীত জীবনের এমন এক অধ্যায়ের উপর থেকে পর্দা তুলতে, যা পরিস্কার না হলে তার বায়োগ্রাফি অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। সেই ভয়ংকর সত্যটির খোঁজে একের পর এক দৃশ্য, চরিত্রের আগমন। "নওরোজ মোস্তফার" অতীতের পঁয়ত্রিশ বছর ধরে জমে রাখা রহস্যের উপর থেকে ধুলোর স্তুপ সরতে থাকে, সত্য মিথ্যে হয়ে যায়, আর মিথ্যে হয়ে যায় ভয়ংকর সত্য।

শেষের ক্লাইমেক্স আসলেই দূর্দান্ত। "প্রারম্ভ" পড়ে যেমন বুকে ব্যথা করছিল, ঠিক তেমনি "শেষ অধ্যায়" মুখে একটা তৃপ্তির হাসিও দিয়েছে।

সুখপাঠ্য।

*লেখককে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ, "তিলোত্তমা" আমাদের বাড়ির নাম, (আপনাকে আমন্ত্রন), আমাদের "মা" এর নামানুযায়ী।

************************************************************

বই: শেষ পান্ডুলিপি
লেখক: নজরুল ইসলাম
রেটিং ৫/৫



‍#সাহিত্যানুশীলন

মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

যে শহরে গল্প লেখা বারণ - মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী

লেখকের প্রথম উপন্যাস। প্রথম উপন্যাস হিসেবে যা দেখিয়েছেন, নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়। 

কোন এলেবেলে কনসেপ্ট নয় একদমই, দারুন উপস্থাপনা, সাবলীল লেখনীর ছাঁচে লেখকের কল্পনার জগৎটা ভাল লেগেছে।

আর সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার এমনিতেই আমার পচ্ছন্দের একটি ঘরানা। কাজেই বইটি পড়তে গিয়ে বিন্দুমাত্র বিরক্তির আভাসও আসেনি। সুখপাঠ্য ছিল।


১৪৪ পাতার বইতে শেষের দিকে ক্লাইমেক্স এর উপর ক্লাইমেক্স। ছোট্ট একটি মফস্বল শহর, যেখানে ছোট অপরাধগুলোই নামমাত্র হয়, সেখানে খুন-খারাপি কিংবা ডাকাতির মতন ঘটনা অসম্ভব ধরনের। গল্প সেই শহরের, সেই শহরের বাসিন্দাদের। একটি বিনোদনমূলক পত্রিকা বের হয়, "গল্প হলেও সত্যি", কাল্পনিক অপরাধের গল্পগুলো গায়ে কাঁটা দেবার মতন, কিন্ত তা ভয়াবহতার পর্যায় পৌঁছোয় যখন তা বাস্তবে রুপ নিতে থাকে।

নিছোক বিনোদন, বাস্তব হয়ে দাঁড়ায়।

"মানুষের মধ্যে অন্যের ক্ষতি দেখার একটা প্রবণতা আছে, সীমিত পর্যায়ে। প্রবণতাটা মাত্রা ছাড়িয়ে বেশি হয়ে গেলে তাকে বলে স্যাডিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজর্ডার"।

আমাদের সমাজের মানুষগুলোর মধ্যে কি এর সংখ্যা বেড়েই চলছে!

"সুপারহিরো চরিত্র ভাবায় আমাদের, কিন্তু এই চরিত্রগুলোর কি কাজ যদি সুপারভিলেনই না থাকে। এভরি পজিটিভ এনার্জি এক্সপেক্টস নেগেটিভিটি।"

সুখপাঠ্য।

*********************************************************************************

বই: যে শহরে গল্প লেখা বারণ
লেখক: মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী
প্রকাশনী: বাতিঘর
রেটিং: ৪/৫

সাহর- শাহরিয়ার খান শিহাব

#পাঠপ্রতিক্রিয়া: "বড় হুজুর বলেন, 'শয়তান কাউকে নিজের দলে আসতে বাধ্য করে না। করতে পারেও না, সেই ক্ষমতাও তার নাই। সে শুধু আহবান করে, ফ...