বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩

মসলার যুদ্ধ....

#সাহিত্যানুশীলন

#পাঠপ্রতিক্রিয়া

মসলার লোভে ইউরোপীয় শক্তির অভ্যূত্থান। এরপর উপনিবেশ স্থাপনের রক্তাক্ত নীল নকশা।
"মসলার যুদ্ধ", সত্যেন সেন এর লেখা ক্ষুদ্র পরিসরের এক ইতিহাস, যার হাত ধরে উপনিবেশবাদ, ক্রুসেডের বিষ, দেশীয় শক্তি, স্বাধীনতা সংগ্রাম এর বীজ বোঝা যায়।

কিছু উদ্ধৃতি তুলে ধরলাম....

"আন্তর্জাতিক আইন? সে তো ইউরোপের জাতিগুলোর নিজেদের ভেতরকার ব্যাপার। লন্ডন বা প্যারিসে যা বর্বরতা বলে আখ্যা পায়, পিকিং এর বুকে তাকেই সভ্যজনোচিত আচার বলে ব্যাখা করা যেতে পারে।"
--------------
"গোয়া দখল করবার পর অ্যালবুকার্ক পর্তুগাল-রাজ ডোম ম্যানুয়েলের কাছে এ সম্পর্কে যে সংবাদ পাঠিয়েছিলেন, তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি লিখেছিলেন...
'গোয়ায় যে সমস্ত আরবীয় ছিল, আমরা তাদের সবাইকে হত্যা করেছি, আমাদের হাতে কেউ রেহাই পায়নি। আমরা তাদের মসজিদের মধ্যে আটকে রেখে, শেষে সেই মসজিদ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি।'............"

--------------
"মানবতাবিরোধী অতি জঘন্য কাজের সাথে যদি কোনোমতে ধর্মকে সংশ্লিষ্ট করে রাখা যায়, তবে তার সব দোষ কেটে যায়। শুধু দোষ কেটে যাওয়াই নয়, সময় সময় তা অতি মহৎ ও পবিত্র কাজ বলেও কীর্তিত হয়ে থাকে।"

---------------
"এই সমাজের এই তো রীতি। যারা উৎপাদন করে, অভার ও অনশন তাদেরই প্রাপ্য। আর তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গেলে দমন-নীতির হিংস্র আক্রমণ তাদের উপরেই নেমে আসে। যুগ যুগ ধরে এই রীতিই চলে আসছে। আজও কি চলছে না?"
----------------
"এই মসলার যুদ্ধ রক্তাক্ত, হিংস্র, বীভৎস! আবার এই মসলার যুদ্ধ প্রাচ্যের পরিবর্তনহীন পশ্চাৎমুখী সমাজের সামনে বৃহৎ বিশ্বের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বদ্ধ জীবনের উপরে দুরন্ত ঝটিকার আলোঢ়ন জাগিয়েছে, প্রচন্ড অত্যাচারের শক্তি স্বপ্ন-দেখা ঘুমন্ত মানুষকে চুলের ঝুঁটি ধরে টেনে তুলেছে!
ওটাও সত্য! এটাও সত্য! কোনটাই মিথ্যা নয়।"
________________________________
বই: মসলার যুদ্ধ
লেখক: সত্যেন সেন
________________________________
#bookreview #bengaliliterature #বাংলাসাহিত্য #সত্যেনসেন #মসলারযুদ্ধ #history #indianhistory #colonialism

রবিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২২

Silence


Silence has its own burden of weight, which perhaps we can feel with a deep sense of admiration. It requires deep acknowledgement that you can see it with bare eyes, you can hear silence even you can touch silence.


Social manifesto has its loud sounds that shook the core of the Autocratic system where freedom can have its form, its agenda, its narrative. Silence gives it a form, word, place. You can feel it, you can touch it, you can move by it.


While standing in front of magnificent nature, silence can take you there where your inner self will feel the urge to combine your presence with the very nature to where your soul belongs to. Your inner anarchic and chaotic noise will have a form with the intervention of silence.

With silence, you will not feel like having a thousand words to describe your inner sensation.

It says that a singer, an artist needs to understand to hear the silence of the body, the silence of nature, those who can not sense it, can never be a true artist. A writer leaves a profound state of contemplation at end of his words with the hands of silence. You need to be silent to touch the silence. When it was time to say the last goodbye to your lover, you touch those hands, yet you touch that silence.


Our Space in and itself is the greatest epic of the silence.

বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১

শেষ পান্ডুলিপি - নজরুল ইসলাম


"নিয়তিতে বিশ্বাস করেন?"

"একটি খুনের নেপথ্যে" দিয়ে লেখকের সাথে পরিচয় এবং ভাল লাগা। থ্রিলার ঘরানার ছিল। "শেষ পান্ডুলিপি" ভাল লাগা বাড়িয়েছে।

লেখকের লেখা সাবলীল, চরিত্রগুলির অঙ্কন দারুন। বই পড়ে যদি সময়, চরিত্রগুলিকে চোখের মাঝে ভেসে বেড়াতে না দেখি, তবে বই আলগোছে সরিয়ে রেখে দেই। কিন্তু এই লেখক ধরে রাখতে পারেন, তার সহজ লেখার ধারায়।

থ্রিলার ঘরানায় লিখতে গেলে খেয়াল রাখতে হয়, পাঠক খুব দ্রুত ইন্টারেস্ট হারায়, শুধুমাত্র "পরের পৃষ্ঠায় কি আছে" এই প্রশ্নটির অ্যাবসেন্স এর জন্যে। কিন্তু লেখক সেটা খুব চমৎকারভাবেই বজায় রেখেছিলেন।

লাইব্রেরীতে চেনা লেখকের বইটি হাতে নিয়ে যখন "প্রারম্ভ" অধ্যায়টি এক নি:শ্বাসে পড়ে ফেলি, তখন কিছুক্ষণ বুকে ব্যথা করছিল। তারপরই বই ব্যাগে গুজে বের হয়ে সোজা বাসায়।


কাহিনীতে দেখা যায়, এক লেখক, "নওরোজ মোস্তফা", বহু বছর পর এমন এক শহরে ফিরে আসেন, তার অতীত জীবনের এমন এক অধ্যায়ের উপর থেকে পর্দা তুলতে, যা পরিস্কার না হলে তার বায়োগ্রাফি অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। সেই ভয়ংকর সত্যটির খোঁজে একের পর এক দৃশ্য, চরিত্রের আগমন। "নওরোজ মোস্তফার" অতীতের পঁয়ত্রিশ বছর ধরে জমে রাখা রহস্যের উপর থেকে ধুলোর স্তুপ সরতে থাকে, সত্য মিথ্যে হয়ে যায়, আর মিথ্যে হয়ে যায় ভয়ংকর সত্য।

শেষের ক্লাইমেক্স আসলেই দূর্দান্ত। "প্রারম্ভ" পড়ে যেমন বুকে ব্যথা করছিল, ঠিক তেমনি "শেষ অধ্যায়" মুখে একটা তৃপ্তির হাসিও দিয়েছে।

সুখপাঠ্য।

*লেখককে ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ, "তিলোত্তমা" আমাদের বাড়ির নাম, (আপনাকে আমন্ত্রন), আমাদের "মা" এর নামানুযায়ী।

************************************************************

বই: শেষ পান্ডুলিপি
লেখক: নজরুল ইসলাম
রেটিং ৫/৫



‍#সাহিত্যানুশীলন

মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

যে শহরে গল্প লেখা বারণ - মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী

লেখকের প্রথম উপন্যাস। প্রথম উপন্যাস হিসেবে যা দেখিয়েছেন, নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়। 

কোন এলেবেলে কনসেপ্ট নয় একদমই, দারুন উপস্থাপনা, সাবলীল লেখনীর ছাঁচে লেখকের কল্পনার জগৎটা ভাল লেগেছে।

আর সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার এমনিতেই আমার পচ্ছন্দের একটি ঘরানা। কাজেই বইটি পড়তে গিয়ে বিন্দুমাত্র বিরক্তির আভাসও আসেনি। সুখপাঠ্য ছিল।


১৪৪ পাতার বইতে শেষের দিকে ক্লাইমেক্স এর উপর ক্লাইমেক্স। ছোট্ট একটি মফস্বল শহর, যেখানে ছোট অপরাধগুলোই নামমাত্র হয়, সেখানে খুন-খারাপি কিংবা ডাকাতির মতন ঘটনা অসম্ভব ধরনের। গল্প সেই শহরের, সেই শহরের বাসিন্দাদের। একটি বিনোদনমূলক পত্রিকা বের হয়, "গল্প হলেও সত্যি", কাল্পনিক অপরাধের গল্পগুলো গায়ে কাঁটা দেবার মতন, কিন্ত তা ভয়াবহতার পর্যায় পৌঁছোয় যখন তা বাস্তবে রুপ নিতে থাকে।

নিছোক বিনোদন, বাস্তব হয়ে দাঁড়ায়।

"মানুষের মধ্যে অন্যের ক্ষতি দেখার একটা প্রবণতা আছে, সীমিত পর্যায়ে। প্রবণতাটা মাত্রা ছাড়িয়ে বেশি হয়ে গেলে তাকে বলে স্যাডিস্টিক পার্সোনালিটি ডিজর্ডার"।

আমাদের সমাজের মানুষগুলোর মধ্যে কি এর সংখ্যা বেড়েই চলছে!

"সুপারহিরো চরিত্র ভাবায় আমাদের, কিন্তু এই চরিত্রগুলোর কি কাজ যদি সুপারভিলেনই না থাকে। এভরি পজিটিভ এনার্জি এক্সপেক্টস নেগেটিভিটি।"

সুখপাঠ্য।

*********************************************************************************

বই: যে শহরে গল্প লেখা বারণ
লেখক: মোহাইমিনুল ইসলাম বাপ্পী
প্রকাশনী: বাতিঘর
রেটিং: ৪/৫

শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১

সূর্যতামসী - কৌশিক মজুমদার

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ


সূর্যতামসী - কৌশিক মজুমদার


ভাল লেগেছে, এই ফ্ল্যাশব্যাকের চিত্রগুলি এক অন্যরকম থ্রিলিংস এর স্বাদ দিয়েছে। পেলাম উনিশ শতকের কলকাতার চিত্র, যেখানে খুন, সোনাগাছি, ম্যাজিক, পাগলাগারদের হাহাকার, ব্রিটিশরাজ, সাইকোলজি থেকে শুরু করে, আছে প্রাচীন হিংস্র চাইনিজ গুপ্তহত্যার কাহিনী, এমনকি ফ্রিম্যাসনও।



পাগলদের চিকিৎসা নিয়ে সেই উনিশ শতকে কি ভাবা হতো, কেমন করে চেষ্টা করা হতো তাদের সুস্থ করবার তার একটা চিত্র লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন চমৎকারভাবে। বিজ্ঞানে অনেক কিছু সহজ করে পাবার জন্যে কি ভয়ংকর এক্সপেরিমেন্টের ভেতর দিয়েও আমাদের যেতে হয় তার একটা ছোট্ট গল্প। দুই যুগের দুই গোয়েন্দাদারের দাস্তান, সাথে পুলিশ ভাইরাও আছেন। এইরম আরোও কিছু সময়ের কাহিনী সমন্বয় এই বই।

অতীত, বর্তমানের ঘটনাগুলো প্যারালালভাবে চলে, আকর্ষন ধরে রাখে। এ একদম আয়েস করে কোন মেঘলা দুপুরে চায়ের কাপের সঙ্গী, আবার রাতের আঁধারেও বেড ল্যাম্প এর আলোতে মেলে ধরার যোগ্যতা রাখে।

এই গল্প শেষ হয়েও হয় নি। এটা প্রথম পর্ব। আশা থাকবে যে প্লট লেখক তৈরি করেছেন, পরের পর্বে যেন যথাযথ জাস্টিস হয়।


পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।

**************

বইঃ সূর্যতামসী
লেখকঃ কৌশিক মজুমদার
রেটিংঃ ৪/৫

**************


#সাহিত্যানুশীলন #সূর্যতামসী #bookworm #koushikmojumdar

বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মারিবার হলো তার সাধ- সুস্ময় সুমন



একটা দীর্ঘ সময় লকডাউন এর জন্যে লাইব্রেরী ছিল বন্ধ। যখন খোলে, যথারীতি হামলা চালাই। এবং বাংলা বইয়ের তাকটা বোধহয় একাই খালি করি। নিজের কার্ড (কারণ ২৪টির বেশি আমাকে আর ইস্যু করছিলনা) এবং সুমি ভাবির লাইব্রেরীর কার্ড নিয়ে লোভীর মতন বগলদাবা করি মোট ৩০ টির মতন বই। এর মধ্যে একখানা হচ্ছে "মারিবার হলো তার সাধ।"


সুস্ময় সুমন এর সাথে পরিচয় এই বইয়ের দ্বারা। "আঁধারের জানালাটা খোলা" এবং "যে ছিল অন্তরালে" এই দুটোও জোগাড় করেছি, লাইনে আছে। সে যাক গে, এই বইয়ের একটু আভাস শুধু শেয়ার করেছিলাম। থ্রিলার প্রেমীদের সাড়া পাই সঙ্গে সঙ্গেই। প্রথম পূর্বাভাস এর পাতাতেই লেখক লেখেন, "প্রিয় পাঠক, হাত-পা গুটিয়ে বসুন। শুরু হতে যাচ্ছে শ্বাসরুদ্ধকর কু‍‍‌ৎসিত এক প্রতিশোধের গল্প"। আমি সত্যিই একটু জমিয়ে বসি।

গল্পের গতি সাবলিল, চমৎকার, গ্রিপিং টাইপ। ক্লাইমেক্স এর জন্যে একদম শেষ অবধিই অপেক্ষা করতে হয়েছে। নৃশংসতার দৃশ্যগুলো আসলেই ভয়াবহ। মানুষের মনের অন্ধকার জগত, অসুস্থ মানসিকতা সত্যিই এমন ভয়াবহ হয়। পড়ার সময় মনে হয়েছিল, একসময় কেউ বোধহয় জিজ্ঞেস করেছিল আমায়, ভুতের ভয় আছে কি না আমার। উত্তর ছিল, আমি ভুতের চেয়ে বেশি "মানুষ"কে ভয় পাই! কারণ একটি মানুষ, আরেকটি মানুষকে ঠান্ডা মাথায় ১৬/১৭ টুকরো করতে পারে!


লেখকের এখন পেশা নাটক নির্মাণ। আমি বোধহয় এখনো তার কোন নাটক দেখেনি। কিন্ত ভালো লাগবে, উনি যা লিখেছেন এই বইয়ে, এইরম কাহিনী দিয়েই চমৎকার ওয়েব সিরিজ বাংলাদেশে নির্মাণ সম্ভব। মনে মনে তো কাস্টিংও করা হয়ে গিয়েছে আমার। গল্পে "তাহিতির" চরিত্রটি শেষ অবধি ... থাক স্পয়লার দেয়া ঠিক হবে না।


সুখ পাঠ্য অবশ্যই।


বই: মারিবার হলো তার সাধ
লেখক: সুস্ময় সুমন
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৯০
রেটিং: ৪/৫

#সাহিত্যানুশীলন

গিলগামেশ- জাহিদ হোসেন

"যা চলে গেছে, তা কি কখনো আর ফিরে আসে?"
ঈশ্বরের মুখোশ" এর দ্বারা পরিচয় এই লেখকের সাথে। লেখক বলেই নিয়েছেন মহাকাব্যের পরিনতি ঘটতে যাচ্ছে, ছোট খাটো এক উপাখ্যানে, কাজেই অল্পতেই খেল খতম টাইপ কিছুই নেই। এবং সেটা দেখিয়েছেনও।

কাহিনীর গতি হঠাতই মনে হবে, কোথাও একদম পাল্টে গেল, কিন্তু নাহ। সুত্রপাত এর সাথে মধ্যখানের সংযোগ সাংঘাতিক ছিল। ফ্ল্যাশব্যাক ছিল দূর্দান্ত।

শেষের দিকে মনে হলো একটু কেমন জড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু খারাপ লাগা বিন্দুমাত্র ছিলনা। সাসপেন্স ছিল, ছিল থ্রিলার, ভয়াবহতা। মিথোলজির মিশেলতো এক অন্য দুনিয়াতে নিয়ে যায়, যার ছাপ আমার এডিটেড বুকোগ্রাফিতে স্পষ্ট।

"লুপ্ত ধর্মাচার" জর্জ লুকাসের বই গুগল করে অস্থির, যার রেফারেন্স লেখক দিয়েছেন তার বইতে। কিন্ত ঘেঁটে দেখার পর জানতে পারলাম এটি নেহাতই তার কল্পনাপ্রসুত। মানে সেইই পর্যায়ের। এর জন্যেই রেটিং বাড়িয়ে ৫/৫ দিতে একটুও দ্বিধা করিনি। 

সৈয়দ শাহ ফতেহ গিল, জাদুকর কর্নেল কালাহান, দুটি দারুন চরিত্র।

"চোখের বদলে নিকষ কালো আঁধার ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে", কেমন একটা অদ্ভুত ভয় লাগা অনুভূতি।

এই সর্তকবার্তা সক্কলের জন্যেই...

"মনে রেখো গিলগামেশ, শিকারও একসময় শিকারীতে পরিনত হয়, আর শিকারী শিকারে।"

সুখপাঠ্য নি:সন্দেহে।

বই: গিলগামেশ
লেখক: জাহিদ হোসেন
পৃষ্ঠাঃ ৪৬৪
রেটিং: ৫/৫



#সাহিত্যানুশীলন

বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১

এক অপ্রেমিকের জন্য -- তসলিমা নাসরিন

এক অপ্রেমিকের জন্য-- তসলিমা নাসরিন


এই শহরেই তুমি বাস করবে, 
কাজে অকাজে দৌড়োবে এদিক ওদিক কোথাও আড্ডা দেবে অবসরে, 
মদ খাবে, তুমুল হৈ চৈ করবে, রাত ঘুমিয়ে যাবে, তুমি ঘুমোবে না।

ফাঁক পেলে কোনও কোনও সন্ধেয় এ বাড়ি ও বাড়ি খেতে যাবে,
খেলতে যাবে,
কে জানে হয়তো খুলতেই যাবে আলগোছে কারও শাড়ি
আমার আঙিনা পেরিয়েই কোনও বাড়িতেই হয়তো।

এ পাড়াতেই হয়তো দু’বেলা হাঁটাহাঁটি করবে,
হাতের নাগালেই থাকবে, হয়তো কখনও জানিয়েও দেবে আমাকে,
যে, কাছেই আছো,
কুঁকড়ে যেতে থাকবো, কুচি কুচি করে নিজেকে কাটতে থাকবো
দেখা না হওয়ার যণ্ত্রণায়,
তবু বলবো না, এসো।
বলবো না, তোমাকে সুযোগ দেব না বলার যে তোমার সময় নেই, বা ভীষণ ব্যস্ত তুমি ইদানিং
তোমার অপ্রেম থেকে নিজেকে বাঁচাবো আমি।

তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবে না। 
বছর পেরোবে, তোমার সঙ্গে দেখা হবে না আমার, 
দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো 
তোমার সঙ্গে দেখা হওয়াটা ঠিক কেমন ছিল 

কী রঙের সার্ট পরতে তুমি, 
হাসলে তোমাকে ঠিক কেমন দেখাতো, 
কথা বলার সময় নখ খুঁটতে, চোখের দিকে নাকি অন্য কোথাও তাকাতে, 
পা নাড়তে, ঘন ঘন চেয়ার ছেড়ে উঠতে, জল খেতে কিনা, ভুলতে থাকবো। 
দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো তুমি ঠিক দেখতে কেমন ছিলে, 
অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যাবে, 
তোমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না। 
এক শহরেই, অথচ দেখা হবে না। 
পথ ভুলেও কেউ কারও পথের দিকে হাঁটবো না, 
আমাদের অসুখ বিসুখ হবে, দেখা হবে না। 
কোনও রাস্তার মোড়ে কিংবা পেট্রোল পাম্পে কিংবা মাছের দোকানে, বইমেলায়, রেস্তোরাঁয়, কোথাও দেখা হবে না।

আরও অনেকগুলো বছর পর, ভেবে রেখেছি, 
যেদিন হুড়মুড় করে এক ঝাঁক আলো নিয়ে সন্ধে ঢুকতে থাকবে 
আমার নির্জন ঘরে, 
যেদিন বারান্দায় দাঁড়ালে আমার আঁচল উড়িয়ে নিতে থাকবে বুনো বৈশাখি 
এক আকাশ চাঁদের সঙ্গে কথা বলবো যে রাতে সারারাত-- 
তোমাকে মনে মনে বলবোই সেদিন, 
কী এমন হয় দেখা না হলে, 
দেখা না হলে মনে হতো বুঝি বেঁচে থাকা যায় না, 
কে বলেছে যায় না, দেখ, দিব্যি যায়! 
তোমার সঙ্গে দেখা হয়নি কয়েক হাজার বছর, 
তাই বলে কি আর বেঁচে ছিলাম না? দিব্যি ছিলাম!

ভেবেছি বলবো, 
তুমি তো আসলে একটা কিছুই-না ধরনের কিছু, 
আমার আকাংখা দিয়ে এঁকেছিলাম তোমাকে, 
আমার আকাংখা দিয়ে তোমাকে প্রেমিক করেছিলাম, 
আমার আকাংখা দিয়ে তোমাকে অপ্রেমিকও করেছি 
তোমাকে না দেখে লক্ষ বছরও বেঁচে থাকতে পারি! 
অপ্রেমিককে না ছুঁয়ে, অনন্তকাল।

এক ফোঁটা চোখের জল বর্ষার জলের মতো ঝরে ধুয়ে দিতে পারে 
এতকালের আঁকা সবগুলো ছবি, 
তোমার নাম ধাম দ্রুত মুছে দিতে পারে চোখের জল। 
তোমাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।

আমাকে একা বলে ভেবো না কখনো, তোমার অপ্রেম আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।

বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১

"হার না মানা অন্ধকার"... তবুও বিশ্বাস করি আলোর জয়


লেখকের মুন্সিয়ানায় অভিভূত আমি। এটা লেখকের লেখা প্রথম পড়া বই। ক'টা দিন ধরেই হরর থ্রিলার ঘরানার কিছু খুঁজছিলাম, চমৎকার এক কথায়। ঐ যে বলেছিলাম, লাইব্রেরীতে গিয়েছিলাম হানা দেবার জন্যে, এটাকে সেখানেই পাই। 

"হার না মানা অন্ধকার"... ১ম পর্ব। ঈশ্বর বিশ্বাস করলে, অপশক্তিকেও স্বীকার করতে হয়। কাহিনী চলছে, দূর্দান্ত এবং মুন্সিয়ানা বলেছি এই জন্যে, এক কাহিনী থেকে লেখক নিয়ে গিয়েছে আরেক কাহিনীতে, এক জগতের কাহিনীর মধ্যে আরেক জগত চলে আসছে, মনে হচ্ছিল মূল কাহিনী বুঝি এটাই। একটুও বিরক্তি আসছিল না, বরং আগ্রহ বেড়েই যাচ্ছে, উত্তেজনায় ভাটা পরেনি, প্রত্যেকটা চরিত্রতের অঙ্কন যথাযথভাবে।

শেষের বেলার ঘটনার জন্যে প্রস্তুত ছিলাম না, পরে মনে হলো, তা তো হবেই, কারণ পরের পর্ব আসছে। ভাগ্যিস, লাইব্রেরীতে ২য় পর্বটাও ছিল, না হলে মাথা গরমটা থামাতে পারতাম না। দূরদেশে এখন এই ২য় পর্ব পাবোটাই বা কোথায়! আর অপেক্ষা বড্ড খারাপ জিনিষ।


"সত্য-কলাম" এর প্রকাশক রফিক শিকদার এর লিখিত উপাখ্যানগুলোতে হারিয়ে যাবেন, সময় ভালো কাটবে। ১০৯ পৃষ্ঠার, পরিসর কম, কিন্তু চমৎকার। ২য় পর্বটাও পড়ার আগ্রহ জাগবে, যেমন আমি এখন শুরু করব। 

********************

বই: হার না মানা অন্ধকার

লেখক: বাপ্পী খান

প্রকাশক: বাতিঘর, ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইং









মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১

"আলাদিন" এর আশায়.......

"আলাদিন" এর আশায়....... 

মহামারীর ধাক্কায় বন্দী শহর জীবন, আবারও স্বাভাবিকতার আশায় বাহিরমুখো। খুলে গিয়েছে, কম্যুউনিটির পাবলিক পাঠাগারগুলোও। মহামারীর ছোবলে বন্দী জীবনগুলো শুরুর ঘন্টা বাজার দিনগুলোতে, ঘরে এনে রেখেছিলাম প্রায় ৩০/৩৫ বই। নিজের লাইব্রেরী কার্ড, আবার ডাক্তার ম্যাডামের কার্ড নিয়েও।

সেগুলো আবার যথাস্থানে ফেরত এবং বগলদাবায় নতুন কিছু নেব বলে ভাবছি, চোখে পরল, "আলাদিন".... এই শব্দটির সাথে আমাদের ৯০' এর শিশুবেলাগুলো একদম মাখোমাখোভাবে জড়িত। একটু স্মৃতিকাতরতার সাথেই হাতে নেই। লেখকের নামটাও বড় চমৎকার। "#আহনাফ_তাহমিদ"। ভাল লাগল। বইয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচয় পাঠ অংশটাও মজার লাগল। পড়া শেষে, মনে হলো ইসসসস.... কবে বের হবে এর ২য় পর্ব। 

খোঁজ করে দেখলাম, এখনোও বের হয় নি। 


একটা অ্যারাবিক আরবান ফ্যান্টাসির জগৎ। ১ম পর্বে চমৎকার করে, কাহিনীকে একটা ভীত দেয়া হয়েছে। শুরুতেই মনে হবে, কি রে ভাই হচ্ছেটা কি! কিন্তু পরে মনে হচ্ছে, আরেব্বাস হলোটা কি!!! উত্তেজনা ছিল। ইস্কান্দর মির্জা, জিন্নাতুল হুদা, আলাদিন, জেসমিন, সাইফার বইয়ের চরিত্রগুলোর নাম। আমি সত্যিই ২য় পর্বের আশায় খুব উৎসাহ নিয়েই অপেক্ষা করছি, কারণ যেখানে গিয়ে শেষ হয়েছে এই পর্ব, সেখান থেকে এই কাহিনীকে একটা জবরদস্ত রুপ দেয়া সম্ভব। 

লেখকের জন্যে অনেক শুভ কামনা।

সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১

Yaqin se yaadon ke bare mein kuchh kaha nahin ja sakta- IFTIKHAR ARIF

Tum ne jo phuul mujhe ruḳhsat hote vaqt diyā thā

vo nazm maiñ ne tumhārī yādoñ ke saath, lifāfe meñ band kar ke rakh dī thī

aaj dinoñ baad | bahut akele maiñ use khol kar dekhā hai,

phuul kī nau pañkhuḌiyāñ haiñ,

nazm ke nau misre,

yādeñ bhī kaisī ajiib hotī haiñ,

pahlī pañkhuḌī yaad dilātī hai us lamhe kī| jab maiñ ne,

pahlī baar tumheñ bharī mahfil meñ| apnī taraf musalsal takte hue dekh liyā thā,

dūsrī pañkhuḌī jab ham pahlī baar, ek dūsre ko kuchh kahe baġhair,

bas yūñhī, jaan buujh kar nazar bachāte hue| ek rāhdārī se guzar ga.e the,

phir tīsrī baar|
 jab ham āchānak ek moḌ par kahīñ mile

aur ham ne bahut saarī bāteñ kiiñ | aur bahut saare baras,

ek saath pal meñ guzār diye

aur chauthī baar ab maiñ bhūlne lagā huuñ

bahut dinoñ se Thahrī huī udāsī keī vajah se shāyad

kuchh log kahte haiñ udāsī tanhā.ī keī kokh se janam letī hai

mumkin hai Thiik kahte hoñ

kuchh log kahte haiñ bahut tanhā rahnā bhī udāsī kā sabab ban jaatā hai

mumkin hai ye bhī Thiik ho

mumkin hai tum aao to bhūlī huī saarī bāteñ phir se yaad aa jaa.eñ

mumkin hai tum aao to vo bāteñ bhī maiñ bhuul chukā huuñ jo abhī mujhe yaad haiñ

yādoñ ke baare meñ aur udāsī ke baare meñ aur tanhā.ī ke baare meñ

koī baat yaqīn se nahīñ kahī jā saktī

https://www.rekhta.org/nazms/yaqiin-se-yaadon-ke-baare-men-kuchh-kahaa-nahiin-jaa-saktaa-tum-ne-jo-phuul-mujhe-rukhsat-hote-vaqt-diyaa-thaa-iftikhar-arif-nazms


সাহর- শাহরিয়ার খান শিহাব

#পাঠপ্রতিক্রিয়া: "বড় হুজুর বলেন, 'শয়তান কাউকে নিজের দলে আসতে বাধ্য করে না। করতে পারেও না, সেই ক্ষমতাও তার নাই। সে শুধু আহবান করে, ফ...